Materials and Metallurgical Engineering- MME
Subject Review
Materials and Metallurgical Engineering (MME)
বুয়েটে এর আসন সংখ্যা ৬০।
বিষয়বস্তু
পৃথিবীর শুরু হতেই ধাতু মানবজীবনের গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে, তখন থেকেই MME এর যাত্রা শুরু। ধাতুর ব্যবহারের উপর ভিত্তি করেই প্রাগৈতিহাসিক যুগগুলোর নামকরন করা হয়েছে তাম্রযুগ (খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০-খ্রিষ্টপূর্ব ৩৩০০), ব্রোঞ্জযুগ (খ্রিষ্টপূর্ব ৩৩০০-খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০), লৌহযুগ (খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০-খ্রিষ্টপূর্ব ৭০০) ইত্যাদি।
এ থেকে জানা যায় যে, আল্লাহ দাউদ (আঃ) কে লোহা নিষ্কাশন ও যুদ্ধক্ষেত্রে লোহা ব্যবহার করে বর্ম নির্মাণের কায়দাকৌশল শিখিয়েছিলেন। ঐতিহাসিক ও প্রত্মতাত্ত্বিক গবেষণা ও অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, সিরিয়া ও মাইনরের হিত্তি (Hittites) জাতি লোহা গলাবার ও নির্মাণের জটিল পদ্ধতি জানতো এবং বর্তমানে ঐ এলাকা খননকালে লোহা গলাবার চুল্লীসহ প্রত্মতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে।
আর এই ধাতু ও ধাতুজাত দ্রব্য নিয়েই মূলত পড়াশোনা হয় Materials and Metallurgical Engineering সাবজেক্টটিতে। তবে বর্তমানে ধাতু ও সংকর ধাতু নিয়েই MME এর সিলেবাস শেষ নয় বরং তার সাথে সিরামিক, গ্লাস, বায়োম্যাটেরিয়াল, সেমিকন্ডাক্টার, পলিমার, কম্পোজিট ইত্যাদি বস্তুও পড়ানো হয়।
একটু বিস্তারিত বললে MME তে পড়ানো হয়-
-বিভিন্ন মৌল ও পদার্থের ধর্ম এবং পদার্থগুলোর ব্যবহারিক প্রয়োগ
-খনি থেকে ধাতু উত্তোলন, পরিশোধন এবং ব্যবহারের কৌশল
- ধাতুর বিভিন্ন রকম বিক্রিয়া, ধাতু দ্বারা তৈরি বিভিন্ন জিনিসের ধর্ম এবং সেগুলো তৈরীর কৌশল
- পলিমারাইজেশন, প্লাস্টিক,সিরামিকস্, সেমিকন্ডাক্টর ইত্যাদি তৈরী ও তার ব্যবহার
চাহিদাঃ
হাতঘড়ি থেকে মোবাইল, চামচ থেকে যুদ্ধের ময়দানের ট্যাঙ্ক, পানির নিচের সাবমেরিন থেকে মহাকাশযান সব কিছুর সাথেই MME এর সম্পর্ক। দেশে এ বিষয়ের চাহিদা ক্রমবর্ধমান, তবে বিদেশে এ বিষয়ের চাহিদা অত্যন্ত বেশি। বিশেষত যেসব দেশ খনিসমৃদ্ধ, সেসব দেশে ‘মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং’, Materials Science/Engineering নামে এ বিষয়েরই একটি প্যারালাল (সমান্তরাল) বিষয়ে চাহিদা অত্যন্ত ব্যাপক। যেহেতু দেশে একমাত্র বুয়েটেই গত কয়েক দশক ধরে ছিল, সে কারণে অন্যদের মত চাকরি নিয়ে প্রতিযোগিতাও কম। এই সাবজেক্টের চাহিদা ব্যাপক হওয়ায় কুয়েট এবং রুয়েটে ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং নামে দুই বছর ধরে এই সাবজেক্ট পড়ানো হচ্ছে।
ভবিষ্যতঃ
ভবিষ্যতে এ বিষয়ে চাহিদা আরো বৃদ্ধি পাবে। জাহাজ শিল্প, মোটর শিল্প, Bio-Material এর ক্ষেত্র তৈরির সম্ভাবনা আছে। দেশে Steel, Ceramic & Plastic Industry বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইলেকট্রনিক্স এর যুগে সিলিকনের মত সেমিকন্ডাক্টর ইন্ড্রাস্ট্রি গড়ে উঠার সম্ভবনাও ব্যাপক।
সহায়ক গুনাবলীঃ বিক্রিয়ার কলাকৌশল, পদার্থের আনবিক গঠন, Crystal Structure সম্পর্কিত জ্ঞান, উদ্ভাবনী শক্তি প্রভৃতি।
কর্মক্ষেত্রঃ
১। BSRM, RSRM, KSRM, AKS সহ সকল স্টিল ইন্ডাস্ট্রি।
২। বিভিন্ন ধাতু উৎপাদন, পরিশোধনগার এবং Re-rolling মিলস।
৩। সিলিকনসহ সকল সেমিকন্ডাক্ট্রর ইন্ডাস্ট্রি।
৪। Intel, IBM সহ সকল ইলেক্ট্রনিক্স জায়ান্ট কোম্পানিগুলো।
৫। শাহীনপুকুর, মুন্নু সিরামিকসের মত সিরামিক ও গ্লাস ইন্ডাস্ট্রি।
৬। তিতাস, পেট্রোবাংলা, বাপেক্সসহ অন্যান্য গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে।
৭। সামরিক বাহিনীর সমরাস্ত্র কারখানা।
৮। আরএফএল, তানিমসহ অন্যান্য প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি।
৯। নৌ-পরিবহন সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে করোশন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে।
১০। মিতসুবিসি, টয়োটার মত মোটর শিল্পগুলোতে।
১১। NASA ও অন্যান্য মহাকাশ গবেষণা সংস্থা এবং সার্নের মত গবেষনা সংস্থা।
১২। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট।
১৩। জাহাজ ও বিমান শিল্প।
১৪। Walton
স্কলারশীপ ও উচ্চশিক্ষাঃ MIT, Michigan, Illinois, California, Johns Hopkins, Pennsylvania সহ অধিকাংশ খ্যাতনামা এবং মাঝারি মানের বিশ্ববিদ্যালয় Material Science এ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও পোষ্টগ্র্যাজুয়েট কোর্সে টিচার আসিস্টেন্ট ও প্রোজেক্ট আসিস্টেন্ট হিসেবে স্কলারশীপ দিয়ে থাকে। দেশে খুব বেশি গবেষণার সুযোগ না থাকলেও বিশ্বে যত গবেষণা হয় তার মধ্যে অন্যতম প্রধান একটি শাখা ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স। ২০১১ সালে কেমিস্ট্রিতে নোবেল পাওয়া Daniel Shechtman ম্যাটেরিয়াল সায়েন্সের উপর কাজ করেই নোবেল পেয়েছেন। তাই অনেকে অন্য বিষয়ে অনার্স করে Material Science এ এম এস বা পি এইচ ডি করে।
এছাড়া এ বিষয়ে গ্রাজুয়েটরা চাইলে Mechanical, Mining, Nuclear Science, Petroleum বা Electronics এর বিভিন্ন শাখায় উচ্চ শিক্ষা নিতে পারে।
Comments
Post a Comment