Geography and Environment - ভূগোল ও পরিবেশ

Background: 

এই ডিপার্টমেন্টে ঢুকলে প্রথমে আপনার যেই কথাটা শোনা লাগবে, সেটা হচ্ছে "জিওগ্রাফি পইড়া কি করবা?" তবে ভালবাইসা আসেন আর ফান্দে পইরা আসেন, একটু কয়েকদিন থাকলে ই বুঝতে পারবেন যে সাবজেক্টটা অনেকটা 'আলুর' মতন। যে কোন তরকারিতে ই দিয়ে তরকারি সুস্বাদু করতে পারবেন। জিওগ্রাফি পইড়া এই ডিপার্টমেন্টের ছেলেপেলে কিছু করা বাকি রাখছে বলে আমার জানা নাই। বিসিএস থেকে শুরু করে, কর্পোরেট ও বিদেশে পড়ানো, গ্র্যাজুয়েটরা অকপেশনাল্লি মোটামুটি ভাল ডিস্ট্রিবিউটেড।
আর না ভাই, আমরা এইখানে রাজধানী, ফুল-ফল, ময়ূর -পঙ্খি এইসব এর নাম মুখস্ত করি না।
Students' backgrounds: 

এখানে ছাত্র-ছাত্রি সাইন্স,কমার্স, আর্টস প্রভ্রতি ভিন্ন বেকগ্রাউন্ড থেকে ই আসে। প্রথম দিকে সব স্ট্রিম একসাথে খাপ খাওয়াতে একটু বেগ পায়, কিন্তু ৩-৪ মাসের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যায়। যদিও মেজর কোর্স গুলা এক, কিন্তু মাইনর কোর্স স্ট্রিম অনুযায়ী ভাগ করা। তাই যে যার স্ট্রিমে দক্ষতা অর্জন করে প্রথম থেকে ই।

Courses Review: 

আগে ই যেহেতু বলা হয়েছে যে বিভিন্ন স্ট্রিম থেকে মানুষ আসে, তাই কোর্স গুলো প্রায় সব স্ট্রিম ই কাভার করে। তবে কিছু হাইলি টেকনিকাল কোর্স যেমন Geographic Information System (GIS), Remote Sensing (RS), Oceanography, Geomorphology, Climatology, Statistics, Environmental Chemistry, Physcical Analysis, Environmental Analysis নন-সাইন্সদের জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াইতে পারে। এক ই ভাবে, Economic Geography, Population Geography, Natural Resource Management, Environmental Management, Landuse, Urban Planning কোর্সগুলো সাইন্সদের জন্য কষ্টের কারণ।
তাই অনেকটা বেলেন্স বিরাজ করে একাডেমিক রেসল্টে। তবে দিন শেষে এই ডিপার্টমেন্টে এর সবচেয়ে চেলেঞ্জিং ও ভাল কোর্সগুলো হচ্ছে Research Methodology কোর্সগুলো যা আপনাকে প্রতি বছর পার করতে হবে। তাই গবেষণা কাজে অন্তত অন্য কারো থেকে ভাল এগিয়ে থাকবেন।

Department Strengths:

এই ডিপার্টমেন্ট প্রচণ্ড পরিপাটি ও টিপটপ। অফিস স্টাফ ও অন্যরাও ভাল পরিমাণ হেল্পফুল। তবে আপনি কতটা কাজ বাগিয়ে নিতে পারবেন সহজে আপনার উপর নির্ভর করবে। আপনার সবার সাথে সুসম্পর্কের উপর।
টিচারদের একাডেমিক কোয়ালিফিকেসস্নও অনেক ভাল, কিন্তু কার কোন টিচারের ডেলিভারি ভাল লাগে সেটা অনেকটা বেক্তিগত ফ্যাক্টর। কিছু কোর্সের ক্লাস করলে আপনার মনে হবে 'ছাইরা দ্যা মা কাইন্দা বাচি' আবার কিছু ক্লাসের পরে মনে হবে যে 'সময় এত তাড়াতাড়ি যায় কেন'?
ডিপার্টমেন্টের ফিল্ড ট্রিপগুলোতে ঢাকার বাইরে যাওয়া হয় আর দ্বিতীয় বর্ষ থেকে ৪-৫ দিন করে থাকা হয় আর প্রতি ফিল্ড ট্রিপ আপনার মরণের আগ পর্যন্ত মনে গেথে থাকবে। এক বাক্যে এইটা সবাই এই ডিপার্টমেন্টের সবচেয়ে বেস্ট জিনিস হিসেবে মার্ক করবে।
বছরের শেষে 'National Environment Olympiad' ডিপার্টমেন্ট হোস্ট করে যা আপনাকে বছরের ভাল কিছুটা সময় পড়ালেখার একঘেয়েমি থেকে রেহাই দিবে।
৮০ জন গ্র্যাজুয়েট এর মধ্যে প্রায় ১০-১৫ জন বিদেশে উচ্চ-শিক্ষা, ১০-১৫ জন শিক্ষাকতা, ৫-১০ জন বিসিএস,২০-২৫ জন ডেভ্লাপমেন্ট সেক্টর, ১০-১৫ ব্যাংক আর বাকিরা বিভিন্ন যায়গায় চাকরি করে।

Department weakness:

উপরে উল্লেখিত কিছু টেকনিকাল কোর্স এ চাকরির বাজার এত ডিমান্ডিং যে এসব কোর্সগুলোতে টিচার ধরে রাখা খুব টাফ। অধিকাংশ স্পেশালিষ্ট হয় দেশের বাইরে থেকে যায় আর নইলে ঢাবিতে জয়েন করতে চায় না। তাই শিক্ষক সঙ্কট কিছুটা বিরাজমান।
রেসাল্ট পাবলিশ করা নিয়ে মাঝে মাঝে গড়িমসি হয়, বিশেষ করে মাস্টার্স লেভেলের। তবে স্নাতক পর্যায়ে পরিক্ষার ৬-৭ মাসে ই এখন রেসাল্ট দিচ্ছে। তাই স্নাতক শেষ করতে আপনার সর্বোচ্চ ৪.৫ থেকে ৪.৮ বছর লাগতে পারে। আর মাস্টার্স ২-২.৫ বছর। তবে এই সমস্যা ঢাবির অনেক সাইন্স ডিপার্টমেন্টে বিরাজমান। সমস্যাটা অনেকটা ঢাবির।
কিছু কোর্স একদম মাইন্দাদা আমলের অথবা রিপিটেটিভ। কেউ জানে না কেন এইগুলা সিলেবাসে আছে। তবে এগুলা হাতে গোনা কয়েকটা। টাইনা চলায় দিতে পারবেন ভাল না লাগলে।

Conclusion: 

ডিপার্টমেন্ট সিলেকসনে আমরা সবার আগে ভাবি চাকরির কথা, তবে জীবনে পড়ার আগে চাকরির চিন্তা করলে খালি চিন্তা ই কইরা যাবেন, চাকরি পাইবেন না। এখনকার দুনিয়াটা পুরাটা নিজের উপরে, একটু খাটলে অনেক দূরে নিয়ে যাইতে পারবেন নিজেরে। তবে যদি স্পুন-ফিডিং এ অভ্যস্ত থাকেন তবে ঢাবি আপনার জন্য না। অনেক বেক-বেঞ্ছার চাকরি-বেবশা করে বড় কেউ হয় আর অনেক ফার্স্ট-সেকেন্ড পোলাপাইন খালি বই মুখস্ত কইরা জীবনের প্লাস-মাইনাস হিসেব করে।
তাই চাকরি আপ্না-আপনি ই আসবে, খালি এই ডিপারট্মেন্টে না, যেই ডিপার্টমেন্ট ই ন্যূনতম মন দিয়ে পড়েন।
----------
আবু ইউসুফ মোঃ আব্দুল্লাহ
প্রাক্তন ছাত্র
ভূগোল ও পরিবেশ

###################

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীনতম বিভাগের কথা বলতে গেলে যে কয়েকটি বিভাগের নাম আসে, তার মধ্যে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ অন্যতম। ১৯৪৮ সালে অধ্যাপক নাফিস আহমেদের হাত ধরে "ভূগোল বিভাগ" নামে এই বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞানের সাথে তাল মিলিয়ে চলবার লক্ষ্যে বিংশ শতাব্দীর শেষ দশকে এসে এই বিভাগের নাম বদলে "ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ" রাখা হয়। উক্ত বিভাগে চার বছর মেয়াদী স্নাতক (সম্মান) ও তিনটি বিষয়ে এক বছর মেয়াদী স্নাতকোত্তর কোর্স চালু রয়েছে। এছাড়া সান্ধ্যকালীন স্নাতকোত্তর, এমফিল ও পিইএচডি ডিগ্রি অর্জনেরও সুযোগ রয়েছে। 
.
প্রতিটি বিভাগেরই কিছু ভালো ও খারাপ দিক থাকে। ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগও প্রকৃতির এই চিরাচরিত নিয়মের উর্ধ্বে নয়। অন্যান্য বিভাগের মতো এই বিভাগের কিছু ভালো দিক যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে কিছু খারাপ দিকও। উক্ত বিভাগে অধ্যয়নরত একজন শিক্ষার্থী হিসেবে শিক্ষার্থীর দৃষ্টিকোণ থেকে এই বিষয়গুলো যতোটা সম্ভব নিরপেক্ষভাবে আলোচনা করবার চেষ্টা করবো। যাদের কথা মাথায় রেখে লেখা, তারা এতে সামান্যতম পরিমাণে উপকৃত হলেও তবেই আমার লেখার সার্থকতা আসবে। 
.
প্রথমেই আসি ভালো দিককার আলোচনায়। ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়টাকে একটা জগাখিচুড়ি টাইপের বিজ্ঞান বলে অভিহিত করা হয়। অর্থাৎ এতে অন্যান্য বিষয়ের মতো কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়বস্তু নিয়ে পড়াশোনার চাইতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অল্পবিস্তর করে পড়াশোনা হয়ে থাকে। এক কথায়, এটাকে প্রাকৃতিক, ভৌত ও সামাজিক বিজ্ঞানের এক অপূর্ব সমন্বয় বলা যেতে পারে। এই বিভাগের একজন শিক্ষার্থীকে একদিকে যেমন প্রাকৃতিক ও ভৌত বিজ্ঞান পড়তে হয়, অন্যদিকে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান সম্পর্কিত বিষয়াদিও পড়তে হয়। এতে বহির্বিশ্বের জ্ঞানবিজ্ঞান সম্পর্কে সম্পূর্ণ জানা সম্ভব না হলেও বেশ ভালো ধারণা পাওয়া যায়, যা পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষায় কাজে লাগে। এ তো গেলো মুদ্রার একদিক; এবার অন্যদিক নিয়েও কিছু বলা যাক। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কোনো একটা বিভাগ সম্পর্কে বলতে গেলে তার উচ্চশিক্ষা নিয়ে যেভাবে বলতে হয়, তেমনি উক্ত বিভাগে পড়ে কোথায় কোথায় চাকরির সুযোগ রয়েছে, সেসব নিয়েও কথা বলতে হয়। এবার সেসব নিয়েই কথা বলবো। উক্ত বিভাগে পড়ে সরকারি ও বেসরকারি চাকরির সুযোগ যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে নিজের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হবার সুযোগ। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বিসিএস-ব্যাংক থেকে শুরু করে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের উচ্চপদে এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাজ করবার নমুনা রয়েছে। অন্যদিকে, বেসরকারি পর্যায়ে UNDP, UNICEF, UNHCR, ADB, WB ইত্যাদির মতো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে Consultant সহ অন্যান্য পদে কাজ করবার সুযোগ এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের হয়েছে। আমরা সকলেই জানি যে, বর্তমান বিশ্বে অন্যতম সর্বাধিক আলোচিত একটা ইস্যু হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন ও তার প্রভাব। একই সাথে আলোচিত ইস্যু হচ্ছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা। ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে পড়াশোনা করে এই দুইটি আলোচিত বিষয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে। এর পাশাপাশি এই বিভাগের দুইটি অন্যতম Practical & Technical Field— Geographic Information System (GIS) & Remote Sensing (RS) এ দক্ষতা অর্জন করতে পারলে দেশে ও দেশের বাইরে তার যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। এছাড়া দেশে-বিদেশে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করবার সুযোগ তো রয়েছেই! 
.
এতক্ষণ তো গেল ভালো দিকের কথা। এবার উক্ত বিভাগের কিছু খারাপ দিক বা বিদ্যমান সমস্যা নিয়ে কথা বলবো। খারাপ দিক বা সমস্যা নিয়ে কথা বলতে গেলে শুরুতেই আসে সেশনজটের কথা। বিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্ভুক্ত অধিকাংশ বিভাগের মতো এই বিভাগেও সেশনজটের সমস্যা রয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা শেষ হবার কথা থাকলেও তা গিয়ে শেষ হয় পরবর্তী বছরের মার্চ এপ্রিল মাসে। অত্যাধিক কোর্স থাকায় ও বিজ্ঞান অনুষভুক্ত অন্যান্য বিভাগের সাথে সমন্বিত কোর্স ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় বলে মূলত এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। এর পাশাপাশি অত্যাধিক ক্লাস, ইনকোর্সের ঝামেলা তো আছেই। অন্যান্য বিভাগে (বিশেষত সামাজিক বিজ্ঞান ও কলা অনুষদভুক্ত বিভাগগুলোতে) প্রতি সপ্তাহে গড়ে সর্বোচ্চ ৮-১০টি ক্লাস হয়, সেখানে এই বিভাগের একজন শিক্ষার্থীকে প্রতি সপ্তাহে গড়ে ২৫টির মতো ক্লাস করতে হয়। এমনকি সকাল আটটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত টানা (দুপুরে খাবারের বিরতি ব্যতীত) ক্লাস করার ঘটনা এই বিভাগে নিত্যদিনের ঘটনা। এ কারণে এই বিভাগে পড়তে গিয়ে অধৈর্যশীলরাও ধৈর্যশীল হতে বাধ্য হয়। অত্যাধিক ক্লাসের ব্যাপারে এই বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে মানিক বন্দোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উক্তিকে প্রায়ই বিকৃত করে বলতে শোনা যায়ঃ
"ঈশ্বর থাকেন ঐ উত্তরপাড়ায়, এখানে তাহাকে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না! "
.
উক্ত বিভাগের ভালো ও খারাপ দিক নিয়ে আলোচনা মোটামুটি এ পর্যন্তও। কেউ এই বিভাগে ভর্তি হতে চাইলে উপরোক্ত বিষয়গুলো মাথায় রেখে ভর্তি হবার অনুরোধ রইলো। যে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বললাম, সেগুলো মাথায় রেখে কেউ ভর্তি হতে চাইলে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে স্বাগতম।

##############################

Comments

  1. Mother of all natural science but master of nuns

    ReplyDelete
  2. সব শাখা থেকেই কী এই subject পড়া যায় ????

    ReplyDelete
  3. আমি পড়তে চাই,
    কোথায় কোথায় আছে?
    চিটাগাং আছে কি জানাবেন প্লিজ।
    ০১৯২৯৬৫৫৩৮৪

    ReplyDelete
  4. এটা কি বিএসসি ডিগ্রির অন্তর্ভুক্ত???

    ReplyDelete
  5. Eta sesh korar por ki B.Sc nki B.A degree dewa hoy....?

    ReplyDelete
    Replies
    1. বিএসসি ডিগ্রি

      Delete

Post a Comment

Popular posts from this blog

সমাজকর্ম Social Work / সমাজকল্যাণ Social Welfare

Islamic History and Culture - ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি