Anthropology - নৃবিজ্ঞান


বাংলাদেশ ও বিদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিষয় হলো নৃবিজ্ঞান। আক্ষরিক অর্থে নৃবিজ্ঞান মানুষবিষয়ক বিজ্ঞান। কিন্তু মানুষবিষয়ক অন্য বিজ্ঞানগুলোর চেয়ে এর পরিধি ব্যাপক। বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা মানুষ নিয়ে এ বিজ্ঞানে গবেষণা করা হয়। লাখো-কোটি বছর ধরে মানুষের বিবর্তন এবং সাংস্কৃতিক বিকাশের গবেষণাও নৃবিজ্ঞানের আওতায় পড়ে। নৃবিজ্ঞানে মানুষকে সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গবেষণা করা হয়। বিভিন্ন জাতের মানুষ ও তাদের সব রকমের অভিজ্ঞতা নৃবিজ্ঞানীদের গবেষণার বিষয়। নৃবিজ্ঞানীরা কোনো একটি বিশেষ মানব সম্প্রদায়ের সাধারণ বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করতে ও সেগুলো ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করেন। এ বৈশিষ্ট্যগুলো মানুষের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য বা সামাজিক রীতিনীতি হতে পারে।
কী পড়ানো হয় : নৃবিজ্ঞানের অন্যতম প্রধান শাখা হলো দৈহিক নৃবিজ্ঞান। দৈহিক নৃবিজ্ঞানে পৃথিবীতে মানুষের আবির্ভাব ও পরবর্তী সময়ে তাদের শারীরিক বিবর্তন নিয়ে আলোচনা করা হয়। নৃবিজ্ঞানের দ্বিতীয় প্রধান শাখা হলো সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান। সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান আবার তিনটি উপশাখায় বিভক্ত প্রত্নতত্ত বিজ্ঞান, নৃতাত্ত্বিক ভাষাবিজ্ঞান ও জ্যোতি বিজ্ঞান। এই তিনটি উপশাখাই মানুষের সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করে। এগুলো থেকে কোন নির্দিষ্ট সমাজের চিন্তাধারা ও আচরণের রীতিনীতি বুঝতে পারা যায়। নৃবিজ্ঞানের গবেষণা মানুষকে সহিষ্ণু হতে সাহায্য করে। অন্য জাতির লোক কেন সাংস্কৃতিক ও দৈহিক দিক থেকে আলাদা আচরণ করে? নৃবিজ্ঞান তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয়। যেসব সাংস্কৃতিক রীতিনীতি ও কাজকর্ম আমাদের কাছে ভুল বা অশোভন মনে হতে পারে, সেগুলো হয়তো বিশেষ পরিবেশগত বা সামাজিক অবস্থার জন্য অভিযোজনের ফসল।
মানুষ কী করে? কেন করে? কীভাবে করে? এর ফল কী? নানা প্রশ্ন নিয়ে নৃবিজ্ঞান কাজ করে। সমাজবিজ্ঞান যেমন সমাজের সব সমস্যা-বিষয় নিয়ে কথা বলে, তত্ত্ব দেয়, ঠিক তেমনি মানুষ নিয়ে নৃবিজ্ঞানের কাজ। শিক্ষার প্রতিটি ক্ষেত্রেই নৃবিজ্ঞানীদের অবাধ বিচরণ প্রয়োজন আছে। নৃবিজ্ঞান একটি ডিসিপ্লিন হলেও এর জ্ঞানকা-ের পরিধি অনেক বেশি। এটি অধ্যয়নে সমগ্র বিষয়কে সস্পৃক্ত করে। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে নৃবিজ্ঞানের প্রয়োজন রয়েছে, যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেন তারা যদি সামাজিক নৃবিজ্ঞান সম্পর্কে অবগত হতেন, তাহলে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হতো না। মানবজাতির মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে, নৃবিজ্ঞান একে অপরকে চিনিয়ে দেয়।
কোথায় পড়বেন : বাংলাদেশের সাতটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান রয়েছে। ১৯৮৫ সালে সর্বপ্রথম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান আসে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান খোলা হয়। এছাড়াও কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান রয়েছে। বিদেশের নামিদামি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান আজ প্রথম সারিতে। আমরা হয়তো বাজারের দরে বিভিন্ন বিষয়কে অনেক মূল্যায়ন করি, কিন্তু নৃবিজ্ঞান মানুষ নিয়ে কাজ করে। মানুষের রান্নাঘর থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পরিচালনা পর্যন্ত সব বিষয় নিয়ে কাজ করা নৃবিজ্ঞানের স্বভাব। তাই বাইরে নৃবিজ্ঞানকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়।
কাজের ক্ষেত্র : সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের এ বিষয়ের আছে বহুমুখী পেশা। এত পেশা অন্য কোনো ডিসিপ্লিনে নেই। পেশাগুলো উপভোগ্য। বাংলাদেশে আপনি শিক্ষা ও প্রশাসনিক সেক্টরে অবস্থান নিতে পারবেন। প্রতœতত্ত্ব, স্বাস্থ্য, জাদুঘর, প্রজেক্ট ডিজাইন, জানস্বার্থে উন্নয়ন প্রজেক্ট, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, গণমাধ্যম, সামাজিক সংস্থা, উন্নয়ন সংস্থা, পরিবেশ ও প্রতিবেশমূলক, অপরাধবিষয়ক, ফরেনসিক বিভাগ, বিমানশিল্প, গামেন্ট শিল্প, মনোবিদ্যা, জৈবপ্রযুক্তি, রোগতত্ত্ব। বলতে পারেন এসব বিষয়ে যে কোনো বিষয়ের ওপর ডিগ্রি নেয়া লোকই আসতে পারে। তবে পেশার এসব সেক্টর নৃবিজ্ঞানীর জন্য উপযোগী। অংশগ্রহণমূলক পর্যবেক্ষণ শুধু নৃবিজ্ঞানই যথার্থভাবে কাজ করে থাকে।
#collected

Comments

  1. স্কলার্শিপ এর সুযোগ কেমন??

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

Islamic History and Culture - ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি

Geography and Environment - ভূগোল ও পরিবেশ

সমাজকর্ম Social Work / সমাজকল্যাণ Social Welfare